ঢাকা: কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে নাজিমুদ্দিন সামাদকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
ইমরান বলেন, “তনু হত্যার বিচারের দাবিতে মানুষ যখন সোচ্চার তখন মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দেয়ার জন্য একটি পক্ষ সুপরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।”
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজিমুদ্দিন সামাদের হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত মশাল মিছিলপূর্ব সমাবেশে ইমরান এসব কথা বলেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে ইমরান বলেন, একের পর এক হত্যার দায় আনসারুল্লাহ বাংলা, রহিম উদ্দিন-করিম উদ্দিনের নামে দিয়ে যাবেন, আর আমরা আপনাদের পড়ানো স্ক্রিপ্ট গলাধঃকরণ করবো, তা আর হবে না। যারাই এই হত্যার পেছনে থাকুক না কেন বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, “যদি আপনারা মনে করেন কোনো উগ্রবাদী গোষ্ঠী এই হত্যার পেছনে আছে তাহলে তাদের ধরে আপনাদের প্রমাণ করতে হবে। আপনারা বারবার একই কথা বলে যাবেন আর আমাদের ভাই-বোনেরা হত্যার শিকার হবে আমরা তা মেনে নেব না।”
ইমরান বলেন, এমনকি অদ্ভুত জীনের আছর পড়লে বাংলাদেশে, যে একটার পর একটা ঘটনা ঘটবে। কিন্তু কোনো ঘটনার ক্লু আপনারা খুঁজে পাচ্ছেন না। আপনারা একটা খেলা পেয়েছেন? একটার পর একটা ঘটনা ঘটবে আর আপনারা নানা ধরনের গান হাজির করবেন, সংবাদ সম্মেলন করবেন। একদিন বলবেন আনসারুল্লাহ বাংলা, আরেকদিন বলবেন জেএমবি, আরেক দিন বলবেন এদের কেউ না অন্য কোনো গোষ্ঠী। এসব বলে জনগণের দৃষ্টি আরেকদিকে সরিয়ে দেবেন। সেটা হবে না।
তিনি বলেন, নাজিমুদ্দিন সামাদের হত্যার পর পরিষ্কারভাবে মনে হচ্ছে এই সব হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এগুলো পরিকল্পিত হত্যা। এসব হত্যার পেছনে এমন কোনো শক্তি আছে যে শক্তি থাকার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চোখে কালো চশমা পরে আছে। তারা কিছুই দেখছেন না। একজন প্রতিবাদী তরুণকে হত্যা করার পর বলা হয়- যারা হত্যা করেছে তারা নাকি ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিয়ে চলে গেছে। এই কথাটি বলে একটা সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দিকে তাক করা হয়। এই তাক করবার ফলে বিচার পাওয়ার যে সম্ভাবনা তা নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি বলেন, “যদি আপনারা মনে করেন কোনো সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠী এই হত্যা করেছে তাহলে তাদের গ্রেফতার করছেন না কেন? কারা এই স্লোগান দিয়েছে আমরা জানতে চাই। আমি পরিষ্কারভাবে মনে করি- এই স্লোগানগুলোর কথা বলে, সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দিকে তাক করে পুরো ঘটনাকে আড়াল করার একটা চেষ্টা করা হয়। তাই একের পর এক হত্যার ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, আমরা বিচার পাচ্ছি না।”
সমাবেশের পরে চলমান হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার বিকেল চারটায় শাহবাগে সংহতি সমাবেশ করার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ শেষে সন্ধ্যা ছয়টায় ঘটনার প্রতিবাদে একটি মশাল মিছিল বের হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে পুনরায় শাহবাগে এসে শেষ হয়।
পাঠকের মতামত: